বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : মানিকগঞ্জের সিংগাইর পৌর এলাকার ঘোনাপাড়া মহল্লার উমেষ সরকার ওরফে হৃদয় (২৩) হিন্দু ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ের প্রলোভনে ১ সন্তানের জননীকে ভাড়া বাসায় রেখে মাসব্যাপী সংসার। এ অভিযোগে মামলা হলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। হাজত খেটে জামিনে ছাড়া পেয়ে মামলার আসামী উমেষ সরকার ভিকটিমের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে রবিবার (১৭ জানুয়ারি) জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ ও থানায় জিডি করেছেন।
পিবিআই এর দায়েরকৃত প্রতিবেদন, পুলিশ সুপারের কাছে দেয়া অভিযোগ ও থানায় জিডি সূত্রে জানা যায়, স্বামী পরিত্যক্তা ভিকটিম এক পুত্র সন্তান নিয়ে সিংগাইর পৌর এলাকার গোলড়া মহল্লায় বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। বিবাদী উমেষ সিংগাইর পৌর বাজারে ছাঈদের কাপড়ের দোকানে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করতেন। ওই দোকানে কাপড় কিনতে যাওয়ার সুবাদে উমেষের সাথে ভিকটিমের পরিচয় হয়। এরপর সে বিভিন্ন সময় ভিকটিমকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। উমেষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে বাদীকে বিয়ে করার প্রলোভন দিয়ে ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর সাভার পৌর এলাকার ছায়াবিথী মহল্লায় বাদীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন।
ধর্মান্তর হয়ে ভুয়া নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিটে বিয়ের ঘোষণা দিয়ে ১০ লক্ষ টাকার কাবিন দেখিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে একত্রে বসবাস করার পাশাপাশি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মাসব্যাপী সংসার করেছে।
এদিকে, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর উমেষ সরকার ভিকটিমের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে। অপারগতা প্রকাশ করলে ভিকটিমকে মারধর করে অচেতন অবস্থায় বাসা থেকে পালিয়ে যায়। উপায়ন্তবিহীন বাদিনী উমেষকে খুঁজতে তাদের বাড়িতে গেলে বাবা কুমুদ সরকার (৪৫), মা সন্ধ্যা রানী (৪২) ও বোন বিশাখা (২০) তাকে মারধর করতে আসে। এ সময় আশপাশের লোকজন রক্ষা করে। এ ঘটনায় উমেষসহ তার বাবা, মা ও বোনকে আসামী করে ভিকটিম বাদী হয়ে গত বছরের ১৬ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মানিকগঞ্জে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ১ মার্চ পিবিআই উমেষের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। বাকিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
মামলার প্রধান আসামী উমেষ ওই মামলায় হাজত বাস করে গত ১৩ ডিসেম্বর আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে বাদীকে মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন। এ ঘটনায় ভিকটি বাদী হয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগসহ থানায় জিডি করেছেন বলে জানান। যে কোনো সময় আসামী ও তাদের লোকজন দ্বারা প্রাণনাশ, অপহরণসহ জানমালের ক্ষতির আশংকা করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত উমেষ সরকার ওরফে হৃদয় বাসা ভাড়া নিয়ে একসাথে কিছুদিন বসবাস ও শারীরিক সর্ম্পকের কথা স্বীকার করে বলেন, জামিনে এসে নতুন করে বাদীকে কোনো হুমকি দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে জিডির তদন্ত কর্মকর্তা সিংগাইর থানার এসআই বোরহান উদ্দিন মোল্লা বলেন, জিডির অভিযোগ অনুযায়ী কোর্টে আবেদন করবো। অনুমতি পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসএস